শেয়ার মার্কেটে আমি যেভাবে ইনভেস্ট করি

কোনো একটা জিনিসে আপনি কতটুকু ইনভেস্ট করবেন, কতদিন পর পর করবেন ইত্যাদি নির্ভর করে ঐ ইনভেস্টমেন্ট থেকে আপনি কিরকম রিটার্ন আশা করতেসেন সেটার উপর।

ধরেন আমি যদি একজন স্টক ট্রেডার হই, তাইলে আমার সব ইনভেস্টমেন্ট হবে শর্ট টার্মের জন্য। আমি যদি আজকে একটা কোম্পানির কিছু শেয়ার কিনি, তাহলে আমার টার্গেট থাকবে হয় ১ সপ্তাহ পর, বা ১ মাস পর, বা ৬ মাস পর ঐ শেয়ারগুলা বেচে যাতে লাভ করতে পারি। স্টক ট্রেডিং ব্যাপারটার লক্ষ্য থাকে শর্ট টাইমে লাভ করা। এই ক্ষেত্রে রিস্কও অনেক বেশি থাকে।

অন্যদিকে আরেকটা ব্যাপার হলো শেয়ার মার্কেতে লং টার্ম ইনভেস্ট করা। যেখানে আপনার আজকে ইনভেস্ট করে আগামী সপ্তাহে শেয়ার বেচে লাভ করার কোনো নিয়ত থাকবে না। লং টার্মের ভেতরেও অনেক ব্যাপার আছে। কতটুকু লং টার্ম? ১ বছর? ৫ বছর? ১০ বছর? পুরা ব্যাপারটা নির্ভর করে আপনি কতটুকু ধৈর্যশীল সেটার উপর।

আমি আমার স্ট্র্যাটেজীটা একটু বলি।

শেয়ার মার্কেটে ইনভেস্ট করার সময় আমি Set & Forget এই রুলটা ফলো করি। মানে আমি ইনভেস্ট করি, এবং করে ভুলে যাই যে ইনভেস্ট করসি। এটার কথা আমি মাথাতেও রাখিনা। আরেকটু ব্যাখ্যা করি পুরা ব্যাপারটা।

আমি যেটা করসি সেটা হলো ৩ টা খুব ভালো ভালো কোম্পানি চয়েস করসি। কোম্পানি চয়েস করার ব্যাপারে এই জিনিসগুলা মাথায় রাখসিঃ

১। আগামী ১০-২০ বছরে কোম্পানিগুলার অস্তিত্ব থাকার চান্স কিরকম? চান্স কম থাকলে ঐ কোম্পানি নেওয়া যাবেনা।

২। কোম্পানিগুলা কি ডিভিডেন্ড দেয়? ডিভিডেন্ড হলো একটা কোম্পানি যখন বছর শেষে তারা যেই লাভ করসে, সেই লাভের একটা অংশ সব শেয়ার হোল্ডারদের ভেতর ভাগ করে দেয়। ডিভিডেন্ড দেওয়া কোম্পানি সিলেক্ট করা খুবই ভালো।

৩। কোম্পানির ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস কিরকম? এটা আরেকটা বড় টপিক। এটা নিয়ে আসলে লেখালেখি করে বোঝানো যাবেনা। আপনারা চাইলে ইউটিউবে এটা নিয়ে অনেক ভিডিও আছে যেগুলা দেখতে পারেন।

ধরেন আমি এভাবে ৩ টা কোম্পানি সিলেক্ট করলাম। এখন আমি প্রতি মাসে একটা নির্দিষ্ট টাকা ওই কোম্পানিগুলোতে ইনভেস্ট করে রাখি।

ধরেন আমি প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা ইনভেস্ট করতেসি। এখানে ৩ টা কোম্পানির জায়গায় ১ টা কোম্পানিও আপনি নিতে পারেন। তবে আপনার পোর্টফোলিও যত Diversified হবে, রিস্ক ফ্যাক্টর ততটা কমে।

এখন ধরেন আমি প্রথম মাসে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে ১ম কোম্পানির শেয়ার কিনলাম। পরের মাসে ২য় কোম্পানির শেয়ার কিনলাম। এভাবে আমি কিনতে থাকি। এবং কিনে মাথাতেও রাখিনা কবে আমি সেই শেয়ার বেচবো।

আমার টার্গেট যত দেরিতে শেয়ার বেচা সম্ভব বেচা। হতে পারে সেটা ১০ বছর, ১৫ বছর।

আপনি যখন ১০-১৫ বছর ধরে একটা ভালো কোম্পানিতে ইনভেস্ট করতে থাকবেন টানা, তখন একটা সময় পর আপনি Compound Investment এর আসল মজা পাবেন। আপনি দেখবেন আপনার রিটার্ন exponential হারে বাড়ছে।

এটা নিয়ে খুব মজার একটা ইউটিউব ভিডিও আছে। আমি ভিডিওটার লিংক পোস্টের শেষে দিয়ে দিবো।

ভিডিওতে যেটা দেখায় তা সংক্ষেপে বলছি। ধরেন একটা কোম্পানির শেয়াররে দাম ৪০০ টাকা করে। আপনি প্রতি মাসে ১৫০০০ টাকা ইনভেস্ট করতেসেন সেই কোম্পানিতে। এর থেকে এক টাকা বেশি না, কম ও না। ওই কোম্পানি যেই ডিভিডেন্ড বছর শেষে আপনাকে দিচ্ছে সেটাও আপনি ইনভেস্ট করে ফেলতেসেন।

তাহলে মোটামোটি ১২ বছর পর দেখা যাবে, আপনার টোটাল ইনভেস্ট এর পরিমান ২০-২২ লাখ টায় গিয়ে দাঁড়াবে। মানে এত টাকা আপনি ওই কোম্পানির পেছনে ঢেলেছেন।

Looking for more insights on টাকাবার্তা? You may find this post valuable. Bitcoin Pizza Day

আর আপনি যত শেয়ার কিনেছেন সেই কোম্পানির, সেগুলার দাম ১২ বছর পর গিয়ে দাঁড়াবে ১ কোটি টাকার কাছাকাছি। তার মানে আপনি আপনার ইনভেস্টমেন্টের প্রায় ৪-৫ গুণ রিটার্ন পাবেন।

তাই শেয়ার মার্কেটে ইনভেস্ট করার ক্ষেত্রে আপনি যত ধৈর্যশীল থাকবেন, ভালো রিটার্ন পাবার সম্ভাবনা তত বাড়বে।

তবে এই স্ট্র্যাটেজি কি ১০০% নিশ্চিত কাজ করে? নাহ। কোনো ইনভেস্টমেন্টই ১০০% নিশ্চিত না, কিছুটা রিস্ক থাকবেই। রিস্ক আছে দেখেই সেটা হালাল ইনভেস্টমেন্ট।

তবে আপনি যদি লং টার্মে চিন্তা করেন, সেই রিস্কের মাত্রা অনেকখানি কমায়ে আনতে পারবেন।

Investment is not a sprint, it’s a marathon!

Find out more about টাকাবার্তা by exploring this related topic. কন্টেন্ট রাইটিং কী? কীভাবে কন্টেন্ট রাইটিং শেখা যায়?

https://youtu.be/CTIRmRViNVA

Similar Posts