আসেন Money Management ব্যাপারটা নিয়ে একটু জানি!

ধরেন আপনি মাসের শেষে ৩০ হাজার টাকা বেতন পান। সারা মাস কষ্ট করে খাটা খাটনির পর এই ৩০ হাজার টাকা যখন আপনার পকেটে আসে, তখন নিজেকে রাজা মনে করা দোষের কিছু না। তবে আপনি যদি ভাবেন এই ৩০ হাজার টাকার পুরাটাই রাজার মতো নিজের ইচ্ছায় খরচ করবেন, তাইলে করতেই পারেন, তবে সেটা খুব স্মার্ট কিছু একটা হবে না।

এইখানেই মানি ম্যানেজমেন্ট এর ব্যাপারটা আসে। আমি যেই ব্যাপারটা নিয়ে কথা বলবো পৃথিবীর প্রায় সব পার্সোনাল ফাইন্যন্স ম্যনেজমেন্ট বইতে এটা নিয়ে বলা আছে। ইউটিউবেও এটা নিয়ে অনেক ভিডিও পাবেন। আমি আমার মতো করে ব্যাপারটা ব্যখ্যা করবো।

আপনাকে যা করতে হবে তা হলো, কয়েকটা ছোট ছোট ফান্ড বানাতে হবে। কয়টা ফান্ড? কি কি ফান্ড? এগুলা আপনার ব্যক্তিগত জীবনের উপর নির্ভর করে। আমি এখানে একটা ছোটো খাটো উদাহারণ দেই।

ধরেন আপনি মাস শেষে ৩০ হাজার টাকা বেতন পাচ্ছেন। ফার্স্টেই এই টাকার একটা অংশ আপনি আলাদা করে রাখবেন মান্থলি খরচ এর জন্য। এটা হতে পারে বাড়ি ভাড়া, মেস ভাড়া, খাবার, বাজার এইসবের খরচ, ইত্যাদি যেগুলা নিত্য প্রয়োজনীয়। এই জন্য আপনাকে জানা লাগবে মাসে কত টাকা আপনাকে এইসব নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের পেছনে খরচ করা লাগে। ধরে নিলাম মাসিক খরচ ১৫ হাজার টাকা।

এরপর বাকি.১৫ হাজার টাকার একটা অংশ আপনি রাখবেন একটা সেভিংস একাউন্টে। এই একাউন্ট আপনার ভবিষ্যত প্রয়োজনের জন্য। যখন আপনি জানবেন আপনার একটা সেভিংস একাউন্ট আছে এবং প্রতি মাসে ওখানে কিছু জমা হচ্ছে, তখন ভবিষ্যতের দুশ্চিন্তায় ঘুম হারাম হওয়ার চান্স অনেক কমে যাবে। ধরে নিলাম আপনি ৫ হাজার টাকা সেভিংস একাউন্টে রাখছেন।

বাকি আছে ১০ হাজার টাকা। এই ১০ হাজার টাকার একটা অংশ আপনি কিছুতে ইনভেস্ট করেন। প্রতি মাসে ওটায় কিছু টাকা ইনভেস্ট করবেন। হতে পারে সেটা স্টক মার্কেট বা অন্য কিছু। এমন কিছু যেটা ভবিষ্যতে আপনাকে স্টেডি ক্যাশ ফ্লো দিবে বা বড় কোনো রিটার্ন দিবে। ধরে নিলাম আপনি ৫ হাজার টাকা ইনভেস্ট করছেন এই খাতে।

এখনো ৫ হাজার বাকি আছে। এই টাকার একটা ছোট অংশ আপনি রাখতে পারেন একটা ইমার্জেন্সি ফান্ডে। এই ফান্ডের কাজ হবে যদি আপনি বড় ধরনের কোনো ঝামেলায় পড়েন, ধরেন এক্সিডেন্ট করলেন, তখন যাতে আপনি এই ইমার্জেন্সি ফান্ডের টাকা ব্যবহার করতে পারেন। যেকোনো ইমার্জেন্সি সময়ে এই ফান্ড আপনার কাজে আসবে। ধরে নিলাম এখানে আপনি মাসে ১ হাজার টাকা রাখবেন।

বাকি ৪ হাজার টাকার একটা ছোট অংশ রাখুন দান খয়রাতের জন্য। হতে পারে সেটা ৫০০ টাকা বা ১ হাজার টাকা। এই টাকাটা আপনি কোথাও দান করবেন, কাউকে দিয়ে সাহায্য করবেন।

বাকি টাকাটা আপনার পকেটে থাকবে। মাসে হুটহাট অন্য কিছু খরচ করতে হলে, কোথায় খেতে গেলে এটা থেকে খরচ করবেন। তবে চেষ্টা করবেন উদ্ভ্রান্তের মতো এই টাকাটা খরচ না করতে।

কারণ, মাসের শেষে এই ছোট্ট এমাউন্ট থেকে আপনার যত টাকা বাচবে, সেটা আপনি রেখে দেবেন আরেকটা ফান্ডে। এই ফান্ডের নাম লাক্সারি ফান্ড, বা মজার ফান্ড, বা পিনিক ফান্ড।

এই ফান্ডের টাকা আপনি খরচ করবেন এমন সব কাজে যেটা লাক্সারি। ধরেন ২-৩ মাসের লাক্সারি ফান্ডের টাকা দিয়ে একটা ট্যুর দিলেন, একটা ভালো স্যুট বানালেন, পছন্দের ঘড়িটা কিনলেন এইসব। এই ফান্ডের কাজই হলো আপনার লাক্সারি বা মজা করার জিনিস গুলো যাতে আপনি কিনতে পারেন ।

লাক্সারি ফান্ডের সবচেয়ে মজার ব্যাপারটা হলো এই ফান্ড দিয়ে যখন আপনি দামি একটা কিছু কিনবেন, তখন আপনার মনে কোনো খচ খচানি আসবে না। কারণ আপনি জানেন, You deserve this amount to have fun!

Similar Posts