আপনার স্বপ্নের গাড়িটা নিজের টাকায় না কিনে অন্যের টাকায় কিনে ফেলুন!

যারা স্মার্ট বড়লোক, তারা যখন কোনো একটা লাক্সারি আইটেম কিনে, তখন কিন্তু সেটা নিজের উপার্জনের টাকায় কিনে না। সেটা কিনে আরেকজনের টাকায়, যাতে নিজের টাকার পরিমাণ না কমে। এটা ইনভেস্টিং এর খুব ইন্টারেস্টিং একটা কনসেপ্ট, যেটা খুব পপুলার হয় Robert Kiyosaki র Rick Dad Poor Dad বই থেকে।

ব্যাপারটা একটু ভেঙ্গে বলি।

ধরেন, আপনার স্বপ্নের গাড়ি হলো Tesla Model S. আপনি দিন রাত এই গাড়ির স্বপ্ন দেখেন। এটাও ধরে নিলাম এই গাড়ির মূল্য ১ কোটি টাকা। এখন আপনি রাত দিন চাকরি করে অথবা ব্যবসা করে এই ১ কোটি টাকা উপার্জন করলেন। যখনই আপনি এই ১ কোটি টাকা দিয়ে টেসলা কিনে সেটা গাড়ির শো রুম থেকে বের করবেন, তখনই সেই গাড়ির মূল্য ৩০% কমে যাবে, কারণ সেটা হয়ে গেছে সেকেন্ড হ্যান্ড। যত দিন যাবে এই গাড়ির দাম ততই কমতে থাকবে। এটার একটা গালভরা নাম আছে, Depreciation! তাই যারা স্মার্ট বড়লোক, তারা নিজের টাকায় লাক্সারি আইটেম কিনেন না।

তাহলে আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে, স্মার্ট বড়লোকরা কি দামী গাড়ি কিনে না? অবশ্যই কিনে। তবে সেটা অন্যের টাকায়। কিন্তু কেমনে এটা সম্ভব? কেন আরেকজন আপনাকে টাকা দিবে আপনার স্বপ্নের গাড়ি কিনবার জন্য? এখানেই আসে ইনভেস্টমেন্টের মজার খেলা!

যারা স্মার্ট বড়লোক, তারা নিজের কষ্টের উপার্জিত টাকা প্রথমেই কোনো Income Generating Asset এ ইনভেস্ট করেন। এই জিনিসটা কি? Income Generating Asset হলো সেই সব এসেট যেগুলো থেকে আপনি টাকা পেতে থাকবেন। হতে পারে সেটা একটা ফ্লাট। আপনি একটা ফ্লাট কিনে যদি সেটা ভাড়া দেন, তাহলে প্রতি মাসে মাসে সেটা থেকে টাকা পেতে থাকবেন।

হতে পারে সেটা একটা ওয়েবসাইট। আপনি যদি একটা ভালো ওয়েবসাইট কিনে ফেলেন, তাহলে প্রতি মাসে সেটা থেকে টাকা আসতে থাকবে।

অথবা আপনি হতে পারেন একজন Angel Investor. যারা Angel Investor, তারা কোনো উদ্যোক্তার Start up এ বিনিয়োগ করেন। সেই স্টার্ট আপ যখন প্রফিটেবল হয়, সেটা থেকে ইনভেস্টর মাসে মাসে প্রফিট পেতে পারেন।

এমন অনেক উদাহারণ আছে ইনকাম জেনারেটিং এসেট এর।

একজন স্মার্ট বড়লোক তার ইনকাম জেনারেটিং এসেট থেকে যেই টাকা আসে, সেটা খরচ করে লাক্সারি আইটেম কিনে। এতে কিন্তু তার নিজের টাকা খরচ হচ্ছে না, খরচ হচ্ছে আরেকজন এর টাকা।

উপরের উদাহারণে ফিরে আসি। ধরে নিলাম আপনি অনেক কষ্ট করে ১ কোটি টাকা আয় করেছেন। এখন এটা দিয়ে টেসলা না কিনে একটা ফ্ল্যাট কিনে ফেললেন। ওই ফ্ল্যাট ভাড়া হলো। প্রতি মাসে আপনি পাচ্ছেন ৫০ হাজার টাকা ভাড়া। এই টাকাটা কিন্তু আপনি আয় করছেন না, আপনার ভাড়াটিয়ে আপনাকে দিচ্ছে।

আরো কিছু টাকা জমার পর আপনি একটা দোকান কিনে ফেললেন, সেই দোকান ভাড়া দিলেন। ধরে নিলাম আপনার সেই দোকান থেকে ভাড়া আসে ১ লক্ষ টাকা। এই টাকাটাও আপনার আয় না, দোকানের ভাড়াটিয়া আপনাকে দিচ্ছে।

এমন আস্তে আস্তে আপনি ইনভেস্ট করতে থাকবেন। অচিরেই দেখবেন, আপনার এসেট গুলো থেকে যেই টাকা আসছে, সেটা দিয়েই আপনার স্বপ্নের গাড়িটা কেনা যাচ্ছে। আর যখন এসেটের টাকা দিয়ে আপনি গাড়ি কিনবেন, তখন সেটা আর নিজের টাকায় কেনা হবে না, আপনি কিনবেন আরেকজনের টাকায়।

তখন গাড়ির Depreciation হোক আর যাই হোক, ওটা নিয়ে আপনার এতো মাথা ব্যথা হবে না। কারণ এটা আরেকজনের টাকা। আর আপনার এসেটগুলো তো প্রতি মাসে টাকা দিতে থাকবেই আপনাকে, সো অচিরেই আপনি নতুন কোনো লাক্সারি কিছু কিনে নিতে পারবেন।

এই কনসেপ্টটার সম্পর্কে একটা সুন্দর Quote আছেঃ

“Don’t work for money. Let your money work for you!”

Similar Posts