কেন এই ঘড়িটা ১৭ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয়েছিলো?

ছবিতে যেই ঘড়িটা দেখতে পাচ্ছেন সেটা ২০১৭ সালে নিলামে উঠেছিলো Phillips Auction House এ। নিলাম শুরু হয়েছিলো ১ মিলিয়ন ডলার থেকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঘড়িটা বিক্রি হয় ১৭.৮ মিলিয়ন ডলারে। কেন ঘড়িটা এত দামে কেউ কিনলো? আজকে সেই গল্পটা বলবো।

এই ঘড়িটা ছিলো Paul Newman (Paul Newman’s Rolex Daytona নামে পরিচিত) এর। Paul ছিলেন একজন বিখ্যাত রেস কার ড্রাইভার। তিনি এই ঘড়িটা ব্যবহার করতেন। একদিন তিনি ঘড়িটা তার মেয়েকে দিয়ে দেন।

উনার মেয়ে তখন আরেকজনের সাথে প্রেম করতো। সিরিয়াস প্রেম। তো মেয়ে তার বয়ফ্রেন্ডকে ঘড়িটা গিফট দেয়। এবং তার কিছুদিন পরেই তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।

বয়ফ্রেন্ড ঘড়িটা তার বেডসাইড টেবিলে রাখে এবং এটার কথা ভুলে যায়।

এভাবে কেটে যায় ১৫ বছর।

১৫ বছর পর বয়ফ্রেন্ড হুট করে দেখে ঘড়িটা তার টেবিলের ভেতর। তার আগের কথা মনে পড়ে যায়। ততদিনে বয়ফ্রেন্ড এবং গার্লফ্রেন্ড দুজনেই তাদের নিজ নিজ জীবনে চলে গেছে।

বয়ফ্রেন্ড ঘড়িটা দেখে আগের কথা মনে করে এবং ঠিক করে ঘড়িটা তার পুরনো প্রেয়সীকে ফিরায়ে দিবে। যেহেতু এটা অনেক দামী তাছাড়াও তার প্রেয়সীর বাবার ঘড়ি ছিলো এটা।

তো Paul এর মেয়ে ঘড়িটা পায় ১৫ বছর পর।

এতো দিনে ঘড়িটায় অনেক দাগ -আঁচড় পরে যায়। তাই সে ঠিক করে একটা ঘড়ির দোকানে গিয়ে ঘড়িটাকে পলিশ করাবে।

দোকানে নিয়ে যাওয়ার পর ঘড়িটা দেখে দোকানের মালিক জিজ্ঞাসা করে এটা কি Paul এর সেই ঘড়ি যেটা পড়ে সে রেস করতো? মেয়েটা বলে হ্যা।

পরে দোকানের মালিক বলেন আমি এখনি এটা টাচ করবো না। আমাকে এক জায়গায় কথা বলতে দিন।

দোকানের মালিক ফোন দেয় Philips Auction House এ। এটা Paul Newman এর পড়া সেই Rolex Daytona জেনে তারা তাজ্জব বনে যায়। এবং সাথে সাথে জিজ্ঞাসা করে এটা পলিশ করা হয়েছে কিনা। দোকানের মালিক বলে না তিনি এখনো এটা টাচ ও করে নাই।

পরে Phillips থেকে Paul এর মেয়ের সাথে কথা বলে তাকে বলা হয় এই ঘড়িটা পলিশ করলে এটার মূল্য একদম নাই হয়ে যাবে। এই আঁচড়গুলাই ঘড়িটার ইতিহাসের সাক্ষী। ঘড়িটা যাতে তাদের অকশন হাউসে পাঠানো হয়। মেয়েটা তাই করে।

Phillips Auction House এ ঘড়িটার নিলাম শুরু হয় ১ মিলিয়ন ডলার থেকে। তারা ধারণা করেছিলো সর্বোচ্চ ৫ মিলিয়ন ডলারে ঘড়িটা বিক্রি করা যাবে।

নিলাম শুরু করার ১০ সেকেন্ডের ভেতর একজন ফোন দিয়ে ঘড়িটার জন্য ১০ মিলিয়ন ডলার বিড করে!

অবশেষে সবাইকে হতবাক করে দিয়ে ঘড়িটা বিক্রি হয় ১৭.৮ মিলিয়ন ডলারে।

এরচেয়ে বেশি দামে আজ পর্যন্ত কোনো ঘড়ি বিক্রি হয়নাই পৃথিবীর ইতিহাসে।

যাস্ট কিছু আঁচড়, দাগ একটা ১ মিলিয়ন ডলারের ঘড়ির দাম ১৭.৮ মিলিয়ন ডলারে নিয়ে গিয়েছিলো।

Similar Posts